ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলায় প্রথমবারের মতো সুগন্ধি জিরা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কৃষক মিন্টু সরকার। তার জমিতে থোকায় থোকায় ঝুলছে সুগন্ধি জিরা, আর বেগুনি ছোট ছোট ফুলের সমারোহে মাঠের দৃশ্য হয়ে উঠেছে নজরকাড়া। শত বছরের কৃষি ইতিহাসে এ এলাকায় জিরা চাষের কোনো নজির নেই, তাই স্থানীয় কৃষকদের জন্য এটি এক নতুন বিস্ময়।
উপজেলার নাকোল ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মিন্টু সরকার তার নিজস্ব জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে জিরা চাষ শুরু করেন। ঝুঁকিপূর্ণ হলেও তিনি ধৈর্য ধরে এই চাষে সফলতা পেয়েছেন। দেশে জিরা চাষ উল্লেখযোগ্যভাবে না হওয়ায় সাধারণত মসলার চাহিদা মেটাতে আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়। তবে শ্রীপুরের উর্বর মাটি ও অনুকূল আবহাওয়া জিরা চাষের জন্য যথেষ্ট উপযোগী বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
মিন্টু সরকার বলেন, “জিরা চাষ করা সহজ নয়, এতে ধৈর্য ও যত্ন প্রয়োজন। তবে কৃষি বিভাগের সহায়তা ও পরামর্শ পেয়ে আমি ভালো ফলন পেয়েছি। আমার উৎপাদিত জিরার সুগন্ধ ও গুণগত মান চমৎকার।
তার সফলতা দেখে আশপাশের কৃষকরাও নতুনভাবে উৎসাহিত হচ্ছেন এবং অনেকেই এ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
স্থানীয় কৃষকদের মতে, জিরা চাষ লাভজনক হলেও এর সম্প্রসারণে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সহজলভ্য বীজ, সঠিক পরিচর্যা এবং বাজারজাতকরণের সুযোগ থাকলে কৃষকরা আরও বড় পরিসরে এ চাষে যুক্ত হতে পারবেন। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা গেলে শ্রীপুর ও আশপাশের এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে জিরা চাষের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সালমা জাহান নিপা জানান, “শ্রীপুরের মাটি ও জলবায়ু মসলা জাতীয় ফসলের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় মসলা চাষে সহায়তা করা হচ্ছে। সঠিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা গেলে এই অঞ্চলে জিরা চাষ একটি লাভজনক খাতে পরিণত হতে পারে।
কৃষি বিভাগ ও সরকারের সহযোগিতায় শ্রীপুরের কৃষকরা জিরা চাষের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হতে পারেন বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।