ইসলাম প্রতিদিন | পর্বঃ ১২
রমজান শুধু রোজা রাখার মাসই নয়, বরং এটি ধৈর্য (সবর) ও কৃতজ্ঞতা (শোকর) শেখার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সময়। এই দুই গুণ একজন মুমিনের চরিত্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা রমজানের মাধ্যমে আরও পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
সবর (ধৈর্য) এবং রমজান
রমজানকে ধৈর্যের মাস বলা হয়, কারণ এটি আমাদের ক্ষুধা, তৃষ্ণা ও ইচ্ছাকে সংযত করতে শেখায়।রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “রমজান হচ্ছে সবরের মাস, আর সবরের প্রতিদান হলো জান্নাত।” (ইবন মাজাহ)শুধু খাবার থেকে বিরত থাকা নয়, বরং রাগ, খারাপ কথা ও পাপ থেকে নিজেকে সংযত রাখাও রোজার শিক্ষা।
শোকর (কৃতজ্ঞতা) এবং রমজান
আমরা যখন সারাদিন রোজা রাখি, তখন বুঝতে পারি খাবার ও পানীয়ের প্রকৃত মূল্য, যা আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন।আল্লাহ বলেন, “যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও, তবে অবশ্যই আমি তোমাদের প্রতি আরো অনুগ্রহ বৃদ্ধি করব।” (সূরা ইবরাহীম: ৭)ইফতারের সময় আমাদের অন্তর কৃতজ্ঞতায় পূর্ণ হয়, যখন আমরা এক ঢোক পানি ও এক খেজুরের স্বাদ উপলব্ধি করি।
কিভাবে রমজানে সবর ও শোকর অনুশীলন করবো?
রোজা রেখে কষ্ট সহ্য করার মানসিকতা গড়ে তোলা (সবর চর্চা)।
ছোট ছোট নেয়ামতের জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা (শোকর চর্চা)। ধৈর্যের পরীক্ষা এলে আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা।গরিব-দুঃখীদের দান-সদকা করা এবং তাদের কষ্ট অনুভব করা। নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত ও দোয়ার মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।
রমজান আমাদের শেখায় কিভাবে ধৈর্য ধারণ করতে হয় এবং কিভাবে আল্লাহর দেওয়া নেয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞ হতে হয়। এই দুটি গুণ যদি আমরা নিজেদের জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, তাহলে পুরো জীবনই হবে বরকতময় ও সফল।
শেষ কথা
রমজান শুধু মাস নয়, এটি একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, যেখানে আমরা ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতার মাধ্যমে নিজেদের আত্মশুদ্ধি করতে পারি। আসুন, এই রমজানকে কাজে লাগিয়ে আমরা ধৈর্যশীল ও কৃতজ্ঞ বান্দা হওয়ার প্রতিজ্ঞা করি!
— ইসলাম প্রতিদিন