দৌলতপুর প্রতিনিধিঃ কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা যুবদলের আহবায়ক বেনজির আহমেদ বাচ্চুর বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা তিনটি পুকুরে অ্যামেনিয়া গ্যাস প্রয়োগ করে প্রায় ৬০ লক্ষাধিক হাজার টাকা মূল্যের দেশি বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মেরে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার আদাবাড়ীয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা সহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ । এলাকাবাসী জানান, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক বেনজির আহমেদ বাচ্চু দীর্ঘদিন ধরে পুকুরে মাছ চাষ করে আসছেন। এবারও তিনি পাঁচটি পুকুরে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করেছেন। সম্প্রতি মাছ বিক্রি করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। বুধবার ভোরে একটি পুকুরে মাছ মরে ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। একই অবস্থা পাশাপাশি আরো দুটি পুকুরে। মোট তিনটি পুকুরে মাছ মরে ভাসতে দেখে এলাকায় তোলপাাড় শুরু হয়ে যায়। বিপুল পরিমান এসব মাছ পানিতে ভারতে দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে বুধবার সকালে এলাকার শত শত মানুষ পুকুর পাড়ে এসে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান ও এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানান তারা।
স্থানীয় মাছ চাষী ও মাছের পরিচর্যাকারী রতন আলী জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পুকুর তিনটিতে পাঙ্গাস, মনো, রুই, মৃগেল সহ শত শত মন মাছ মারা গিয়েছে। পুকুর তিনটিতে প্রায় ১২ হাজার পাঙ্গাস মাছ ছিল। একেকটি পাঙ্গাস মাছের ওজন আড়াই থেকে সাড়ে ৩ কেজি পর্যন্ত। এছাড়াও পুকুরে বিপুল পরিমান মনো ত্যালাপিয়া সহ অন্যান্য মাছ ছিল। কয়েকটি চিতল ও রুই মৃগেল মাছের ওজন দেখা গেছে ৮ থেকে ১০ কেজি। শত শত মন মাছ এভাবে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে যুবদল এই নেতা। তার মুল পেশা মাছ চাষ। পুকুর তিনটি আর কোন মাছ জীবিত নাই। বিষ অথবা গ্যাস ট্যাবলেট দিয়ে কিভাবে মাছগুলোকে মেরে দেয়া হয়েছে প্রাথমিকভাবে ধারনা বলে করা হচ্ছে।
মাছ ব্যবসায়ী ইব্রাহিম বিশ্বাস জানান, গত কয়েখদিন আগেও ৫০ লক্ষ টাকা মাছের দাম বলেছিলাম। কিন্তু তিনি বিক্রি করেননি। পুকুরে ৫০ লক্ষাধিক টাকার মাছ ছিল। ক্ষতিগ্রস্থ মাছ চাষী ও উপজেলা যুবদলের আহবায়ক বেনজির আহমেদ বাচ্চু বলেন, পুকুর তিনটিতে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার মাছ ছিল। তিনটি পুকুর প্রায় ৬ বিঘা জমির নিয়ে তৈরী করা হয়েছিল। পাঙ্গাস, মনোর পাশাপাশি পুকুরের ৮ থেকে ১২ কেজি ওজনের চিতল, রুই ও মৃগেল মাছও ছিল। বিষ প্রয়োগের ফলে সব শেষ। এ বিষয়ে দৌলতপুর থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে। দৌলতপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হোসেন আহমেদ স্বপন বলেন, খবর পেয়ে সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে পানি ও কাটা পরীক্ষা করে প্রাথমিভাবে ধারনা করা হচ্ছে পুকুরে অ্যামোনিয়া গ্যাস ট্যাবলেট প্রয়োগ করা হয়েছে। ফলে অক্সিজেন শুন্য হয়ে মাছ মারা গেছে। দৌলতপুর থানার ওসি নাজমুল হুদা বলেন, এ ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে গ্যাস ট্যাবলেট প্রয়োগ করে মাছগুলোকে নিধন করা হয়েছে। এখনো লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।