ইসলাম প্রতিদিনঃ পর্বঃ ১৮
জাকাত: ইসলামের অন্যতম মূলনীতি
জাকাত ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি। এটি শুধু দান নয়, বরং সম্পদের পবিত্রতা রক্ষা ও সমাজের দরিদ্রদের সহায়তার একটি মহান ব্যবস্থা। কুরআনে বলা হয়েছে—
“আর তোমরা নামাজ কায়েম করো এবং জাকাত প্রদান করো…”
(সুরা আল-বাকারা: ৪৩)
কারা জাকাত পাওয়ার যোগ্য?
কুরআন (সুরা আত-তাওবা: ৬০) অনুসারে ৮ শ্রেণির মানুষ জাকাত পেতে পারেন:
১. গরিব
২. মিসকিন (অত্যন্ত অভাবী)
৩. জাকাত আদায়ের কর্মচারী
৪. নতুন মুসলিম বা ইসলামের প্রতি সহানুভূতিশীল
৫. দাস মুক্তির জন্য
৬. ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি
৭. আল্লাহর পথে (ফি সাবিলিল্লাহ)
৮. মুসাফির বা পথিক
জাকাত আদায়ে প্রচলিত ভুল ধারণা
নিজের আত্মীয়দের জাকাত দেওয়া যাবে না— ভুল। দরিদ্র আত্মীয়দের জাকাত দেওয়া উত্তম।
জাকাত শুধু রমজানে দিতে হবে— ভুল। জাকাতের নির্দিষ্ট সময় নেই, তবে রমজানে দেওয়া বেশি ফজিলতপূর্ণ।
জাকাত শুধু নগদ টাকা দিতে হয়— ভুল। যেকোনো সম্পদ (সোনা, রুপা, শস্য, গবাদিপশু) দিয়েও জাকাত দেওয়া যায়।
আত্মশুদ্ধির জন্য জাকাতের ভূমিকা
জাকাত শুধু সম্পদের ভাগাভাগি নয়, এটি আত্মশুদ্ধির মাধ্যম। আল্লাহ বলেন—
“তাদের সম্পদ থেকে সদকা গ্রহণ করো, যা তাদের পবিত্র করবে এবং পরিশুদ্ধ করবে…”
(সুরা আত-তাওবা: ১০৩)
এটি মানুষকে লোভ-লালসা থেকে দূরে রাখে এবং ধনী-গরিবের মাঝে একতা সৃষ্টি করে।
জাকাত ইসলামী অর্থনীতির ভারসাম্য রক্ষার প্রধান হাতিয়ার। এটি যথাযথভাবে বিতরণ করলে দারিদ্র্য কমবে, সমাজে শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।