নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রায় দু’শ বছর আগে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ তার জীবদ্দশায় চৈত্রের দৌলপূর্ণিমা তিথীতে বাউলদের নিয়ে সাধু সঙ্গ করতেন। ভক্তদের খাটি করে গড়ে তুলতে লালন শাহ কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় নিজের এই আখড়া বাড়িতে সাধুসঙ্গ করতেন।
১২৯৭ বঙ্গাব্দে মরমী সাধক লালন ফকিরের মৃত্যুর পর থেকে লালন স্বরণোৎসব নামে তা পালন করছে ভক্তরা। আধ্যাত্বিক জগতের মহাগুরু লালনকে স্মরণ করে, অজানাকে জানতে, জ্ঞাণ সঞ্চয়, আত্মার শুদ্ধি ও মুক্তির লক্ষে দিনক্ষন ঠিক রেখে দেশ বিদেশ থেকে লালন ভক্তরা এই উৎসবে এসে যোগ দেন।
তবে এবার পবিত্র রোজার মধ্যে লালন উৎসব স্বল্প পরিসরে হওয়ায় সাধু ভক্তদের উপস্থিতিও কম। বাউল মেলা, সঙ্গীতানুষ্ঠান না থাকায় তেমন কোন দর্শনার্থীও নেই। তবে অনুসারী যারা এসেছেন তারা লালনের রীতি মেনে সাধু সঙ্গ করবেন।
আজ বৃহষ্পতিবার একদিনে একাডেমির আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেও আগামী কাল ১৪ মার্চ দুপুরে পূর্ণসেবা গ্রহন করে বাউলরা আখড়াবাড়ি ছেড়ে যাবেন।
লালন একাডেমি আজ ১৩ মার্চ বিকেলে আখড়াবাড়িতে একাডেমির মিলনায়তনে সংক্ষিপ্ত আলোচনার মধ্যে শেষ করবেন লালন স্বরণোৎসব।
লালন মাজারের খাদেম খোদা বক্স ফকির জানান, আজ সন্ধ্যায় আমরা গুরুকার্যে বসবো। ভোরে সেহরীর পূর্বেই আমরা বাল্য সেবার মধ্য দিয়ে আমাদের কার্যক্রম শেষ করবো। তবে যদি কেউ দুপুরে থাকে তাহলে তারা নিজেদের কাফেলায় নিজেদের উদ্যোগে পূণ্য সেবা নিবে। আমরা সকালেই সবাইকে বিদায় দিয়ে দেবো।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর সকল ধর্মের মানুষের মাঝে সত্যের বাণী প্রচারের মাধ্যমে আমরা আমাদের মানবতার ধর্ম প্রচার করি। এজন্য কারও ধর্মের মানুষ কষ্ট পাক এটা আমরা চাই না।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির সভাপতি তৌফিকুর রহমান জানান,লালন স্মরণোৎসবের নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ-র্যাব এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়েছে।
পরের উৎসবে একতারা দোতারা আর ঢোল বাশির সুরে ও আধ্যাত্মিক গানে মেতে উঠবে লালন আখড়াবাড়ি, এমনটাই প্রত্যাশা লালন ভক্তদের।