মিরপুর প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে গত
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) মিরপুর উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের দপ্তর প্রধানগণ, ইউনিয়ন পরিষদের
কয়েকজন চেয়ারম্যান, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, প্রেস ক্লাবের সভাপতি,
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার, থানা অফিসার ইনচার্জ এর উপস্থিতিতে উপজেলার
মাসিক মিটিং ও আইন শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং কে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিটিং
বলে অপপ্রচার করছে মিরপুরের স্বার্থান্বেষী একটি মহল। তারা অপপ্রচার করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। তাদের টার্গেট ছিল এটাকে পুঁজি
করে ইউএনও কে প্রত্যাহারের আন্দোলনে নামা। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুষ্টিয়া জেলার
ছয়টি উপজেলাসহ সারা দেশে একইভাবে মাসিক মিটিং-এ কমবেশি ইউপি চেয়ারম্যান গণের
উপস্থিতি রয়েছে।
এপ্রসঙ্গে মিরপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি মারফত আফ্রিদী বলেন, সারাদেশে সব উপজেলাতেই
মাসিক আইন শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং-এ চেয়ারম্যানরা অংশগ্রহণ করে। বিষয়টি সবাই অবগত
আছে। এটা নতুন করে কোন সমালোচনার বিষয় নয়। তিনি আরো বলেন, এখানে ইউএনও কে দোষ
দিয়ে লাভ নেই, স্থানীয় সরকার যদি চেয়ারম্যানদের পদ বিলুপ্ত করে তবে এমনিতেই তাদের মিটিংয়ে
আসা বন্ধ হয়ে যাবে। একটি কুচক্রী মহল তাদের স্বার্থ হাসিল করতে ব্যর্থ হয়ে উপজেলা
নির্বাহী অফিসার জনাব বিবি করিমুন্নেছাকে সরানোর জন্য এটা নিয়ে ইস্যু তৈরি করার
চেষ্টা করছে।
মিরপুর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ৫ই আগষ্টের পর মেয়র, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও
ভাইস চেয়ারম্যানদের পদ বিলুপ্ত হওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার একই সাথে উপজেলা
প্রশাসক, পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্ব পালন করছেন। স্থানীয় সরকারের
বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধির সবগুলো পদ বিলুপ্ত হলেও এখন পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদ এর
চেয়ারম্যান মেম্বারদের পদ বিলুপ্ত হয়নি। ফলে আইনি বাধ্যবাধকতা থাকায় চেয়ারম্যানরা পূর্বের
ধারাবাহিকতায় উপজেলা পরিষদের মাসিক মিটিং এ উপস্থিত হন। উপজেলা প্রশাসক হিসেবে
উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা মাসিক মিটিংয়ে সভাপতিত্ব করেন। তিনি একই সাথে
উপজেলা আইন শৃংখলা মিটিংয়ে সভাপতিত্ব করেন। সারাদেশের ন্যায় গত ১৩ ফেব্রæয়ারী
বৃহস্পতিবার মিরপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উক্ত মাসিক ও আইন শৃঙ্খলা সভা উপজেলা
প্রশাসক/উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে বেশ কয়েকজন
ইউপি চেয়ারম্যানও বিগত দিনের ন্যায় উপস্থিত ছিলেন। উক্ত ঘটনাকে একটি স্বার্থন্বেষী মহল
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে সভা বলে অপপ্রচার করে
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ভাব-মূর্তিকে ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করে।
এবিষয়ে মিরপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিবি করিমুন্নেছা এর মতামত জানতে চাইলে
তিনি বলেন, একটি কুচক্রী মহল তাদের অনৈতিক ও অযৌক্তিক দাবি দাওয়া পূরণ করতে ব্যার্থ
হয়ে প্রশাসনের উপর চড়াও হয়েছে। তারা প্রশাসনকে বিতর্কিত এবং অস্থিতিশীল করার জন্য
বিভিন্ন সময়ে চেষ্টা করে গেছে। সম্প্রতি উপজেলার মাসিক সমন্বয় মিটিং ও আইনশৃংখলা
মিটিং কে কেন্দ্র করে একটি অনলাইন নিউজ প্রচন্ড বিদ্বেষমূলক নিউজ করেছে এবং এটিকে
কেন্দ্র করে সোশাল মিডিয়ায় বিদ্বেষ ছড়ানো হয়েছে যা খুবই দুঃখজনক। স্থানীয় সরকার
বিভাগ কর্তৃক নির্ধারিত একটি আইন শৃংখলা কমিটি আছে, কমিটির সদস্যরা এ
মিটিংয়ে আসেন। একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে কাউকে মিটিংয়ে আসতে নিষেধ
করার এখতিয়ার আমার নেই। বিষয়টিকে ইস্যু বানিয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ সোশাল
মিডিয়ায় মব তৈরি করে ইউএনও প্রত্যাহারের আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের
অফিসারদের এরা সহজ শিকার মনে করে এবং নিজেদের স্বার্থ আদায়ের জন্য বিভিন্নভাবে
অফিসারদের অপমান অপদস্ত করার চেষ্টা করে। এরকম ট্রেন্ড চলতে থাকলে মাঠ প্রশাসনের অফিসাররা
ভালভাবে ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে এবং পরিণতিতে সাধারণ মানুষ
ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সমাজে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে।
স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে জানা যায় মিরপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার
পূর্ববর্তী ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় থেকেই রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন ও অপশক্তির বিরুদ্ধে
কাজ করে গেছেন এবং বর্তমান সময়ও ন্যায়ানুগভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। উপজেলা নির্বাহী
অফিসারের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন।